তখন আমি পড়ালেখার বাহানায় প্রায়ই বিদ্যালয়ে যেতাম, আমার উদ্যেশ্য যদিও দুষ্টুমি আর সময় পাস করাই ছিলো, তারপরেও ঘর থেকে বের হতাম পড়া-লেখার কথা বলে।
দুষ্টুরশিরোমণি হওয়াতে বিদ্যালয়ে আমার সেই লেভেলের কদর ছিল, বকবক করা আমার নেশা এবং দুষ্টুমি আমার পেশা, একই সাথে নেশা এবং পেশা দুইটাই মেইন্টেন করে যেতাম আমি। দুইটা দায়িত্বই আমি কোনোরকম অবহেলা কিংবা ত্রুটি ছাড়াই সমান গুরুত্বের সাথে আঞ্জাম দিয়ে যেতাম। যার কারণে স্যারদের অনেকেই আমার এমন পারফরমেন্সে খুশি হয়ে মাঝে মাঝে বেত ট্রিট দিতেন।
সে যাই হোক,
একদিন আমার বকবকে অতিষ্ঠ হয় স্যার নসিহত স্বরুপ বললেন-
– মানুষের সবকিছুরই একটা লিমিট থাকে, শুধুমাত্র হায়াত না, বাকি সবকিছুরই থাকে।
– যেমন? (আমার প্রশ্ন)
– এই ধরো, একটা মানুষের বিশ বছর হায়াত আছে, তো তার বিশ বছরের সাথে প্রয়োজন মাফিক কথা বলার লিমিট, নিশ্বাসের লিমিট, খাবার লিমিট এবং যাবতীয় যা আছে সবকিছুরই লিমিট থাকে।
– কিভাবে?
– তুমি দেখোনি! মৃত্যুর পুর্বে কিছু মানুষ খেতে পারে না, আবার কেউ কেউ কথা বলতে পারে না, আবার কেউ কেউ হাঁটা-চলা করতে পারে না?
– তারমানে দাড়াচ্ছে একজন মানুষের সবকিছুই লিমিটেড, হায়াত, হাঁটা-চলা করা, খাবার দাবার, ঘুম সহ আরো যা কিছু আছে সব?
– ইয়েস সেটাই।
– আচ্ছা স্যার, এই যে, আমাদের নিয়ম করে পিটুনি দেন, চিল্লাপাল্লা করেন, অকারণে দাঁড় করিয়ে রাখেন, আপনার কি মনে হয় না! আপনার এবং আমাদের সবারই সবকিছু সীমিত করে দিচ্ছেন?
পিছনে কীসের জানি একটা আওয়াজ হলো এবং সেই সাথে হালকা ব্যথাও অনুভুত হয়েছিলো।
[মনে হলো যেন আমি আবুল হয়ে গেলাম, আর সেই সাথে হায়াতও কিছুটা কমে গেল]