ইন্টারভিউ কথন || authlab

গত কয়েকদিন আগে authlab সফটওয়্যার ডেভেলপার পজিশনে মানুষ লাগবে মর্মে তাদের ওয়েবসাইটে একটা বিজ্ঞপ্তি দেয়। সিলেটে সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রিতে জব খোঁজা প্রার্থীদের অনেকের মতো আমারও পছন্দের একটা কোম্পানি authlab। বিশেষ কিছু কারণের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হীরা ভাই, এবং জুয়েল ভাই। সে যাই হোক। আপাতত ওদিকে না যাই, অভিজ্ঞতা শেয়ার করি।

আমি নরমালি যেখানে সেখানে সিভি ড্রপ করি না, রিকোয়ারমেন্টস ভালোমতো দেখে-শুনে-বুঝে তারপরেই ড্রপ করি। হুদাই চেহারা দেখানোর জন্য যাওয়ার কোনো মানে হয় না। যারা ইন্টারভিউ নেয় তারাও বিরক্ত নিজেরও জুতার তলার ক্ষয়। অনেকে বলেন অভিজ্ঞতার জন্য যেতে, এখানে আমার ঘোর আপত্তি।

authlab এর রিকোয়ারমেন্টস ছিলো (VueJS/WordPress) সমস্যার শুরুটা এখানেই, আমি ‍দুইটার একটা ধরে সামনের দিকে এগিয়ে যাই। আর তারপরেই ছ্যাকাটা খেয়ে বসি। দেখলাম আমার সাথে অনেক কিছুই ম্যাচ করছে, এডভান্টেজ গুলোও আমার পক্ষে যাচ্ছে, সুতরাং এ্যাপ্লাই করাই যায়।
অ্যাপ্লাই করলাম। তারপরে ধরা খেলাম।

কেমন ছিলো ইন্টারভিউ:-
এক কথায় আমার লাইফের সেরা একটা ইন্টারভিউ ছিলো। এখানে ঠিকে থাকার সর্বোচ্চ সুযোগ ছিলো। রিকমেন্ডেশন এবং তাদের এক্সেপেক্টেশন সবই নিজের ফেভারে নেয়ার মতো ছিলো। বলা যায় অফুরন্ত একটা সুযোগ ছিলো। কিন্তু কাজে লাগেনি। আমি ওয়ার্ডপ্রেস ধরে বসে আছি, নতুবা এ ক’দিন ভালোমতো VueJS নিয়ে পড়ে থাকলে অবশ্যই কাজে লাগত।
প্রথমে তাদের Written Test ছিলো সেখানকার প্রশ্ন দেখে চৌক্ষে সরিষাফুল দেখতে শুরু করে দিলাম। যদি ভুলক্রমে একবার সরিষাফুলের পরিবর্তে গাঁদাফুল দেখতে পেতাম, তাহলে হয়তো কাজে লাগাতে পারতাম। :p
তাদের ভিতরকার মানুষগুলো অসাধারণ, এবং তারা যে সেরা এটার প্রমাণ দিতে তারা বিন্দুমাত্র কমতি রাখেননি। আমাদের বসিয়ে রেখে তারা নিখোঁজ হয়েও যাননি। শুধু আমাদেরই চাকরী দরকার এমনটা মনে হয়নি, তাদের ব্যবহারটা এমন ছিলো; মনে হয়েছে তাদের একজন মানুষ দরকার, আর তার জন্য যে আমরা গেছি সেজন্য তারা কৃতজ্ঞ।

আমাদের কাছে এসে বারবার জানতে চেয়েছেন আমাদের কোথাও কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না, আমাদের প্রশ্ন বুঝতে সমস্যা হচ্ছে কি না। আরো সময় লাগবে কি না। সাথে খাবার-দাবার তো আছেই। মোট কথা তাদের দিক থেকে যেটা পেয়েছি সেটা এক্সপেক্টেশনের অনেক বেশীই ছিলো। মনেই হয়নি ইন্টারভিউ দিতে গেছি। মনে হইছিলো আড্ডা দিতে গেছি। আর তাদের ব্যবহার দেখে মনে হয়নি তারা খানিক আগে পরিচিত হয়েছেন। সিম্পলি বললে ফ্রেন্ডলি একটা এনভায়রনমেন্ট ছিলো।

সবশেষ করে এইবার ভাইভা’তে গেলাম, বরাবরের মতো সবকিছু গুলায়ে দিয়ে আসব- বিপত্তিটা বাঁধলো এখানে। তারা তাদের পক্ষ থেকে আমার নার্ভাস অবস্থাটা কাটানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেলেন। বারবার সুযোগ দিলেন। ফ্রেন্ডলি একটা পরিবেশ তৈরি করতে তারা তাদের সর্বোচ্চটা দিয়ে গেলেন। আমি আমার দিক থেকে নিজের জড়তা কাটিয়ে উঠতে পারিনি তাই ওখানেও নিজের ফেভারে নিতে পারিনি কিছুই। তাছাড়া আগেই মনে মনে জানা হয়ে গেছে আমাকে দিয়ে তাদের কোনো কাজ হচ্ছে না, এটাও একটা কারণ হতে পারে ইজি না হতে পারার। যথেষ্ট সময় দিয়েছেন ইজি হওয়ার জন্য। আমি পারিনি।
সবশেষ করে- সুন্দর করে বুঝিয়ে দিলেন, ভুলগুলো ধরিয়ে দিলেন, একজন সিনিয়র হিসেবে জুনিয়রকে ছোট ভাইয়ের মতো সুন্দর কিছু সাজেশন দিলেন। তারপর সুন্দরমতো বিদায় করে দিলেন। authlab এর অফিস থেকে বের হওয়ার অনেক পরে আমি ফিল করছি যে আমি রিজেক্ট খেয়েছি। :p

জাগ্রত স্বপ্ন

আমি প্রায়ই স্বপ্ন দেখি, বেঁচে থাকি কিংবা না থাকি, স্বপ্ন পূরণ হোক কিংবা না হোক, তারপরে ও স্বপ্ন দেখে যাই। স্বপ্ন দেখতে তো আর ভ্যাট ট্যাক্স লাগেনা তাই সম্ভবত। :p  ঘুমের আগের ঘোর লাগা সময়টা স্বপ্ন দেখার জন্য পারফেক্ট একটা টাইমিং, তখন অদ্ভুদ সব স্বপ্ন দেখা যায় আবার চাইলে সেগুলো লিখেও রাখা যায়। স্বপ্ন দেখার জন্য আমার মনে হয় বেষ্ট টাইম এটাই।

 

ইতালির সিসিলিতে একবার যাব, মরার পরেও বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে একবার দেখে আসব, খানিক্ষন তাদের দেখে দেখে হিংসে করব তারপর চলে আসব। জগতে হিংসে করার অনেক কিছুই আছে, কিন্তু এই মানুষগুলো সত্যিই হিংসে করার মত, যারা মরার পরেও যুগ যুগ ধরে বেঁচে আছে। আমি ছোট্র সেই ঘুম কুমারি রোজালিয়া’কে একবার দেখে আসব, যে কিনা মরার পরেও অনেকদিন ধরে ভালবাসার প্রতিক হয়ে বেঁচে আছে।

 

একদিন প্যারিসে যাব, প্রিয় মানুষগুলির সাথে কয়েকটা সন্ধ্যা কাটিয়েই চলে আসব, নীল সাদার কোলাহলে আমি হারিয়ে যেতে চাই জাগতিক সব কোলাহলের বাইরে।

 

একদিন যাব রোমান কলোসিয়ামে, রক্তপিপাসু সম্রাটদের আনন্দের খোরাকের বলি হওয়া হাজারো মানুষ আর জীবজন্তুর রক্তের স্মৃতিঘেরা ছাদ বিহীন রক্তের বন্যায় সিক্ত সেই মঞ্চটা একবার দেখে আসব।

 

একদিন যাব আকাবাকা নদীর উপর ভাসতে থাকা স্বপ্নের নগরী ভেনিসে, পিয়াজ্জা সান মার্কোর সেই ভৌজ পেলেস এ কিছুটা মুহুর্ত কাটিয়ে সন্ধ্যার সেই সুর্য ডোভার স্বাক্ষী হয়ে রিয়ালটো ব্রিজ পাড়ি দিয়ে ক্যাফে ফ্লোরেইনে প্রিয় মানুষের সাথে এক কাপ কফি ভাগাভাগীতে খেতে চাই।

 

আমি যাব সেই সুন্দরী জুরিখে, আমষ্টারডাম, বার্লিন কিংবা ষ্টকহোমে। এ্যারিজোনার গ্রান্ড ক্যানিয়নে উড়ন্ত প্লেন থেকে ড্রাইভ দিয়ে নীচে পড়তে পড়তে প্যারাসুট খোলার আগে একটিবার আওয়াজ ছেড়ে ভাঙা গলায় নিজের মত করে মন খুলে গাইতে চাই “I BELIEVE I CAN FLY…  I BELIEVE I CAN TOUCH THE SKY

 

দারুচিনি দ্বীপের সেই স্বপ্নের সেন্ট মার্টিন একবার ঘুরে আসতে চাই, নীল পানিতে হঠাৎই জুকে পড়া উল্টানো বাটির মত আকাশটাকে খুব কাছ থেকে দেখে আসতে চাই। একটা ডুবে হারিয়ে যেতে চাই বঙ্গোপসাগরের অতল থেকে অতলান্তে।

 

আমি যেতে চাই মুসলিমদের সেই অন্তস্থল জেরোজালেমে অবস্থিতে আল আক্বসা মসজিদে, সেখানকার বারান্দায় বসে মন খুলে উচ্ছারণ করতে চাই মধুর সেই আওয়াজ ধ্বনী,  ওয়ান্নাজমী ইযা হাওয়া, মা দ্বাল্লা ছাহিবুকুম ওমা গাওয়া, ওয়ামা ইয়ানতিক্বু আ’নিল হাওয়া ………………………………

 

ঘুরে আসতে চাই দার্জিলিং, কাঞ্চনজঙ্গা, কাশমীর, তিব্বত, হিমালয়, লাদাখের ফুং সুখ ওয়াংড়ুর অদ্ভুদ সেই বিশ্ববিদ্যালয়টাও দেখে আসতে চাই।

 

একদিন যাবো তাজমহল। কোন এক জোৎস্নারাতে খুব একা হয়ে আমি বসে বসে তাজমহল দেখবো। দেখবো ভালোবাসার গায়ে চাঁদের ভালোবাসার আঁচড়।

 

মীরপুরের মাঠে বাংলাদেশ আর ভারতের খেলায় মাশরাফির হাতে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ পুরস্কারটা দেখতে চাই। গ্যালারীতে বসে মন খুলে কাছ থেকে একবার হাজারটা বাধাকে অজুহাত দেখিয়ে প্যাশনকে প্রাধান্য দেয়া চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়া  লড়াকু সেই সৈনিক কে কাছ থেকে দেখতে চাই।

 

আমি মারা যাবার আগে নিজের মতো করে একদিন বেঁচে যেতে চাই। এরপর যদি কখনো কেউ জিজ্ঞেস করে, “hello gentleman are you ready to die??”

আমি বলতে পারবো, “Yes i am ready…. Let’s Do It…. Let’s Finish the game…………….”

 

জানালায় ব্যবহার করুন aria2 , youtube-dl এবং wget

Aria2 আর youtube-dl সম্পর্কে আশা করি বিষদ বিবরণ লেখতে হইবেনা, লিনাক্স ইউজারদের অতি পরিচিত একটি ডাউনলোডার, ইউটিউব ভিডিও ডাউনলোডের সেরা একটা টুলস youtube-dl wget ও কোনদিকে কম যায়না

তার মধ্যে আরিয়া2, উফ! কালা টার্মিনালে তার রুপ যৌবন দেখা না গেলেও প্রেমে পড়ার মত তার আজিব কিছু মায়াবী ফিচার। :p

ওকে চলেন কেমনে কি করতে হয় একটু দেখে নেই।

প্রথমে আপনার একটা চকলেট খাইতে হবে, এবং শুধু আপনিই না আপনার মেশিনরেও চকলেট খাওয়াইতে হবে। যান আপনার চকলেট টা খেয়ে আসেন পরে আপনার মেশিনরে খাওয়ামুনে। :p
প্রথমে ষ্টার্ট মেনু থেকে CMD লিখে সার্চ করেন Command Prompt নামে কিছু একটা পাবেন ওটার উপরে রাইট ক্লিক করে এ্যাডমিন মোডে চালু করেন। এবার নিচের কোড কপি কইরা পেষ্ট করেন।
@powershell -NoProfile -ExecutionPolicy Bypass -Command "iex ((New-Object System.Net.WebClient).DownloadString('https://chocolatey.org/install.ps1'))" && SET PATH=%PATH%;%ALLUSERSPROFILE%\chocolatey\bin

যদি কোড ঠিক মত রান না করে তাইলে এইখান থাইক্যা দেইখ্যা সবকিছু ঠিকটাক কইরা আবার উপরের কোড রান করান, আর যদি কোড ঠিক মত রান করে তাইলে মনে কইরেন আপনার মেশিন ঠিকমত চকলেট হজম করতে পারছে।

ওকে এইবার টুলস গুলা দেখা যাক।
কমান্ড উইন্ডো অপেন কইরা
choco install aria2
choco install wget
choco install youtube-dl

একটা একটা কইরা ইনষ্টল দেন আর লিনাক্সে যেভাবে ডাউনলোডাইতেন সেভাবেই কাজ চালিয়ে যান।

বোনাস

চকলেট প্যাকেজ লিষ্ট যেখানে থেকে আরো অনেক কামের আ-কামের অনেক এ্যাপস পাইবেন।

আরিয়া 2 এর ম্যানুয়াল

Wget ম্যানুয়াল

youtube-dl ম্যানুয়াল

 

বিঃ দ্রঃ যা করবেন নিজ দায়ীত্বে বুইঝ্যা শুইন্যা কইরেন, কোন প্রকার ঘঠনা দূর্ঘটনার জন্য লেখক দায়ী থাকতে বাধ্য নয়, তবে হ্যা যে কোন সুবিধা অসুবিধা অথবা  কোন সমস্যা হইলে জানাইতে পারেন।

তিনি স্টিভ জবস।

আলোকিত জীবন গড়তে মাত্র ১৯ বছর বয়সে ঘর ছেড়েছিলেন তিনি। চলে এসেছিলেন ভারতে। মরমিবাদে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। রপ্ত করেছিলেন ভিন্ন ধারার জীবনযাপন। রীতিমতো উপবাস করতেন। ফলমূল খেয়ে কাটিয়ে দিতেন দিনের পর দিন। সেই থেকেই ভগ্নস্বাস্থ্য তাঁকে অধিকার করে বসেছিল কি না জানা যায়নি। তবে পরবর্তী কয়েক দশকে তিনি তথ্যপ্রযুক্তির জগৎ প্রায় নিজের দখলে নিয়ে গিয়েছিলেন। ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস মেশিনস (আইবিএম) করপোরেশনের মতো বাঘা প্রতিষ্ঠানকে টেক্কা দিয়েছিলেন। তিনি স্টিভ জবস।
তরুণ বয়সে আগাগোড়া বোহেমিয়ান ছিলেন, যিনি কলেজের গণ্ডিই পেরুতে পারেননি। অথচ সেই জবসই কিনা উদ্ভাবন করেছেন অ্যাপল কম্পিউটার, গান শোনার যন্ত্র আইপড, আইফোন, আইপ্যাডের মতো যুগান্তকারী সব জিনিস। একক ও যৌথভাবে ৩৩৮টি পণ্যের পেটেন্ট আছে তাঁর। কদিন আগেও তিনি ছিলেন অ্যাপল কম্পিউটার ইনকরপোরেটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও)।. ভগ্ন স্বাস্থ্য ও জরা-ব্যাধিতে কাবু জবস গত ২৪ আগস্টে ৫৬ বছর বয়সে অ্যাপল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়ে যান। জবস অব্যাহতি নেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বাজারে অ্যাপলের শেয়ারের দর ৫ শতাংশ কমে যায়।
দত্তক ছেলে :
স্টিভেন পল জবস ১৯৫৫ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের সান ফ্রান্সিসকোতে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা আবদুল ফাত্তাহ জানদালি ছিলেন একজন সিরীয়। মা জোয়ানে সিম্পসন ছিলেন কলেজ স্নাতক। জন্মের পর জবসকে দত্তক নেন নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের পল ও ক্লারা জবস দম্পতি। তিনি বেড়ে উঠেছেন এমন এক জায়গায়, যেটি পরবর্তী সময়ে বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তির তীর্থস্থান হয়ে ওঠে। জায়গাটি সিলিকন ভ্যালি। একটা সময় ক্যালিফোর্নিয়ার ওই স্থানটি ইলেকট্রনিক বর্জ্যের ভাগাড় ছিল। অনেক প্রকৌশলী তাঁদের গ্যারেজ গড়ে তুলেছিলেন সেখানে। জবস বোধ করি তাঁদের দেখেই উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন। ১৯৬৯ সালের দিকে স্টিফেন উজনিয়াক নামের এক তরুণের সঙ্গে পরিচয় হয় জবসের। বয়সে তাঁর চেয়ে পাঁচ বছরের বড় উজের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে জবসের। ইলেকট্রনিকসের প্রতি দুজনের ছিল গভীর আগ্রহ।
স্কুলের গণ্ডি পেরোলেন জবস। বায়না ধরলেন রিড কলেজে পড়ালেখা করবেন। রিড লিবারেল আর্টসের ওপর বেশ ব্যয়বহুল একটি কলেজ। অসচ্ছল পল-ক্লারা দম্পতির পক্ষে সেই ব্যয়ভার বহন করা কষ্টকর হয়ে পড়ল। জবসের জন্মদাত্রী মাকে তাঁরা কথা দিয়েছিলেন, ছেলেটাকে ভালো কোথাও পড়াবেন। সেই কথা রক্ষা করতে রিড কলেজেই ভর্তি করালেন জবসকে। বেতনও দিলেন। কিন্তু এক সেমিস্টারের বেশি আর এগোতে পারেননি জবস। ঝরে পড়েন।
অ্যাপলের যাত্রা :
আবারও ইলেকট্রনিকসের সেই ভাগাড়ে ফিরে এলেন জবস। বন্ধু উজের সঙ্গে কম্পিউটার বোর্ড বানানোর কাজ শুরু করলেন। আশপাশের অনেকে সার্কিট বোর্ডটি বেশ পছন্দ করল। জবসের মাথায় চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। বন্ধুকে ডেকে বললেন, জিনিসটা বিক্রি করা যায় কি না। সেদিন থেকেই অ্যাপল কম্পিউটারের জন্ম।
শুধু উদ্ভাবনী শক্তি নয়, তরুণ বয়স থেকেই জবসের মধ্যে ব্যবসায়ীসুলভ একটা মনোভাব ছিল। এদিকে বন্ধু উজ সার্কিট তৈরিতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখলেন না। এবার কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ তৈরি ও অ্যাসম্বলিংয়ে মন দিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই উন্নতমানের একটা কম্পিউটার দাঁড়িয়ে গেল। নাম দেওয়া হলো ‘অ্যাপল-২’।. তা ১৯৭৭ সালের কথা। দুই বন্ধু আঁচ করতে পারলেন, অ্যাপল-২ বাজারের যেকোনো কম্পিউটারের চেয়ে গুণে-মানে সেরা হবে। হলোও তা-ই। কিন্তু ব্যবসা করতে হলে মূলধন লাগবে। এই দুই হীরার টুকরা বন্ধুকে ঠিকই চিনলেন প্রসেসর নির্মাতা ইন্টেল করপোরেশনের সাবেক এক কর্মকর্তা। প্রতিভাবান বন্ধুদ্বয়কে আড়াই লাখ ডলার পুঁজি দিলেন। দেখতে দেখতে দুই বছরের মাথায় ব্যবসা দাঁড়িয়ে গেল। বিশ্বজুড়ে তখন পার্সোনাল কম্পিউটার কেনার হিড়িক। সেই জোয়ারে ১ নম্বর কাতারে, সবার পছন্দের তালিকায় উঠে এল অ্যাপল-২।. ব্যবসা রমরমা হয়ে উঠল। ১৯৮০ সালের ডিসেম্বরের দিকে স্টিভ জবসের সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেল। তখন তাঁর বয়স মাত্র ২৫।
প্রতিযোগিতার মুখে অ্যাপল শুরুতেই আইবিএমের মতো প্রতিষ্ঠানের প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি হতে হলো অ্যাপলকে। প্রতিযোগিতার মুখে ম্যাকিনটোশ নামের নতুন প্রকল্পের দিকে ঝুঁকলেন জবস। এর মূল কথা ছিল, ‘কম্পিউটার ব্যবহার টোস্টারের মতোই সহজ।’
১৯৮৫ সালের শেষের দিকে নিজের গড়া অ্যাপল ছেড়ে দেন জবস। নতুন প্রতিষ্ঠান ‘নেক্সট’র দিকে মন ও মনন দুইই ঢেলে দেন। এখানেও কম্পিউটার তৈরির পালা। তবে আরও উন্নতমানের, যা শুধু উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার কাজে ব্যবহূত হবে। নতুন প্রতিষ্ঠান সাফল্যের মুখ দেখাতে পারেনি জবসকে। উল্টো তারা হার্ডওয়্যার ছেড়ে সফটওয়্যারের দিকে ঝোঁকেন। নেক্সটের বাজার মন্দা। তাই এক দশকের মাথায় অ্যাপল কিনে নিল ‘নেক্সট’কে। আবার অ্যাপলে ফিরলেন জবস।
১৯৯৮ সালে জবস বিশ্ববাসীকে উপহার দেন ‘আইম্যাক’ কম্পিউটার। ডেস্কটপ কম্পিউটারের ইতিহাসে এ এক অনন্য অবদান। হু হু করে বাড়তে থাকে আইম্যাকের কাটতি। ২০০০ সালের জানুয়ারিতে অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে নিযুক্ত হন জবস। শুধু কম্পিউটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেননি জবস। ছোটখাটো কিন্তু দৈনন্দিন কাজে দরকারি প্রযুক্তিপণ্য তৈরিতে মনোনিবেশ করে অ্যাপল। তৈরি করে আইপড, আইফোন, আইপ্যাড। তৈরি হয় পৃথিবীর সবচেয়ে পাতলা ল্যাপটপ কম্পিউটার ম্যাকবুক এয়ার।আর এ সবকিছুতেই ছিল জবসের উদ্ভাবনী চিন্তাশক্তি।
ব্যক্তিজীবনে জবস :
ফোর্বস সাময়িকীর জরিপমতে, গত বছর পর্যন্ত জবসের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ৮৩০ কোটি ডলার। যার কল্যাণে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ৪২তম ধনাঢ্য ব্যক্তি হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেন।
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী জবস ১৯৯১ সালে লরেন পাওয়েলকে বিয়ে করেন। সে ঘরে তাঁর এক ছেলে ও দুই মেয়ে। এক বান্ধবীর ঘরে আছে জবসের তরুণ বয়সের আরেকটি মেয়ে। ২০০৩ সালে তাঁর শরীরে টিউমার ধরা পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে অস্ত্রোপচার না করায় বিপজ্জনক দিকে মোড় নেয় সেটি।অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হন। কিন্তু ২০০৮ থেকে আবার শরীর-স্বাস্থ্য ভাঙতে শুরু করে জবসের। ওজন কমে গিয়ে রোগা হয়ে পড়েন। এর পরের বছরও তাঁর স্বাস্থ্যের কোনো উন্নতি দেখা যায়নি। তবে ২০১০ সালে প্রচণ্ড কর্মোদ্যমী একজন মানুষ হিসেবে কাজে ফেরেন তিনি। তারপর আবারও অসুস্থতা ঘিরে ধরে তাঁকে। তাই সিইও থেকে পদত্যাগের এই ঘোষণা।
পদত্যাগপত্রে জবস লিখেছিলেন, ‘আমি সব সময়ই বলি, যেদিন দেখব আমি আমার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারছি না, সেদিনই আপনাদের জানিয়ে দেব। সে দিনটা এসেছে।’ জবস তাঁর কথা রেখেছেন।

সোর্স: উইকিপিডিয়া, এবং বিভিন্ন অনলাইন ব্লগ।

Published by: Hasan Misbah

hello world

hello world!

welcome to my virtual home.