সুন্দর রাত, আমি আদৌ জানিনা ইহাকে সুন্দর বলে কি না, ঘুটঘুটে অন্ধকার তার সাথে ঝিরঝির বৃষ্টি। চাঁদ, তারা কেউই নেই আজ আকাশে। একাকী আকাশ সাথে আছে মেঘমালা। পৃথিবী অন্ধকার হোক কিংবা আলোকিত হোক তাতে আকাশের কিচ্ছু যায় আসে না। আকাশ তার সৌন্দর্য নিয়ে তারমত বসে আছে।
এমন রাতের মাদকতায় খুন হতে কোন আপত্তি নাই, আকাশ আর আমি খুবই কাছাকাছি, আমি এটাও জানিনা যে কতটা দূরে থাকলে তাকে দুরত্ব বলে, যেহেতু আমি আর আকাশ একে অন্যে দেখতেছি সেহেতু আমরা খুব নিকটেই আছি।
মিউজিক প্লেয়ারে এ্যালান ওয়াকারের এ্যালোন ট্র্যাকটা বাজতেছে, হাতে একটা জন প্লেয়ার থাকলে মন্দ হত না, নিকোটিনের বাক্স টা যে রুমে রেখে চলে এসেছি।
একটা তুমি থাকলে ফোন দিয়ে একসাথে আকাশ দেখার লোভ দেখিয়ে প্যাকেট টা আনানো যেত। সেই যাই হোক, তুমিও নাই নিকোটিনও সাথে নাই, আবার এমন মাদকতায় ঘেরা আকাশ রেখে রুমে যাওয়ার কোনো মানে হয় না, একটা জন প্লেয়ারে যে পরিমাণ নেশা হবে, আকাশে তারও বেশী নেশা আছে।
ছাদের উপরে বেশ কয়েকটা ভাঙা দরজা রাখায় জায়গাটা মোটামুটি শুয়ে থাকার উপযুক্ত, আমি শুয়ে শুয়ে আকাশ দেখতেছি, কানে হেডফোন লাগানো তাও আবার ফুল ভলিউমে গান বাজতেছে। হঠাৎ গান অফ হয়ে রিংটোন ভেজে উঠলে ঘোর কেটে যায়। আননোন নাম্বার। এই নেশার ঘোরে থাকা সময়টাতে ডিস্টার্ব করার কোনো মানে হয়? অনিচ্ছা স্বত্বেও ফোনটা রিসিভ করলাম, আমি হ্যালো বলার আগেই।
– আচ্ছা আপনি কী প্রতিদিনই নিয়ম করে আকাশ দেখেন?
– হ্যা কিন্তু আপনি কে?
– আমাকে আপনি চিনবেন না।
– ঠিক আছে, যেহেতু চিনবই না সেহেতু…
বলেই ফোনটা কেটে দিলাম।
আমার বান্ধবী মাহবুবা যার সাথে ক্লাস ফোর পর্যন্ত একটা পুরো দিন সম্পর্ক ভালো ছিল না, তারপর আমি লেখাপড়া ছেড়ে দিয়ে বাউণ্ডুলে হওয়ার পর আমাদের আর সম্পর্ক খারাপ হয়নি। অবশ্য তারও একটা কারণ আছে, মাহবুবা-ই সম্ভবত সেই মানুষ যাকে আমি সবচেয়ে বেশী ভয় পাই, একই সাথে সেই মানুষ যাকে আমি নির্দিধায় যাচ্ছে তাই বলতেও পারি।
ফোনের পর আকাশী নেশার ঘোর প্রায় কেটে গেছিলো, ওদিকে আর মনোনিবেশ করতে পারিনি। তারপর যান্ত্রিকতায় ডুবে গেলাম। ফেসবুক স্ক্রল করতেছি হঠাৎ হোয়াটসঅ্যাপে মাহবুবার মেসেজ “হারামজাদা মেয়ে মানুষের কন্ঠ শুনলে ভাব বেড়ে যায়? কালকে দেখা করিস”